settings icon
share icon
প্রশ্ন

কলসীয় পুস্তক

উত্তর


মূল বাক্যাংশঃ কলসীয় পুস্তক

মূল বাক্যাংশের ব্যাখ্যাঃ আপনি কি কলসীয় পুস্তকটির সারসংক্ষেপ করতে পারেন? কলসীয় পুস্তকটির সব কিছু কি সম্পর্কে লিখিত?

লেখকঃ প্রেরিত পৌল ছিলেন কলসীয় পুস্তকের প্রাথমিক লেখক (কলসীয় ১:১ পদ)। এটি লেখার ক্ষেত্রে তীমথিয়কেও কিছু কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে (কলসীয় ১:১ পদ)।

লেখার সময়কালঃ কলসীয় পুস্তকটি সম্ভবত ৫৮-৬২ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে লেখা হয়েছিল।

লেখার উদ্দেশ্যঃ কলসীয় পুস্তকটি একটি ছোট-নৈতিকতা পাঠ, খ্রীষ্টিয়ান জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে সম্বোধন করে। পৌলের ব্যক্তিগত জীবন ও কাজ থেকে বাড়ি এবং পরিবারে, অন্যদের সাথে আমাদের আচরণ করা উচিত। এই পুস্তকের বিষয়বস্তু হল আমাদের প্রভুর পর্যাপ্ততা, যীশু খ্রীষ্টে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের চাহিদা মেটানো।

মূল বা প্রধান পদসমূহঃ কলসীয় ১:১৫-১৬ পদ, “ইনিই অদৃশ্য ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি, সমুদয় সৃষ্টির প্রথমজাত; কেননা তাঁহাতেই সকলই সৃষ্ট হইয়াছে; স্বর্গে ও পৃথিবীতে, দৃশ্য কি অদৃশ্য যাহা কিছু আছে, সিংহাসন হউক, কি প্রভুত্ব হউক, কি আধিপত্য হউক, কি কর্তৃত্ব হউক, সকলই তাঁহার দ্বারা ও তাঁহার নিমিত্ত সৃষ্ট হইয়াছে।”

কলসীয় ২:৮ পদ, “দেখিও, দর্শন বিদ্যা ও অনর্থক প্রতারণা দ্বারা কেহ যেন তোমাদিগকে বন্দি করিয়া লইয়া না যায়; তাহা মনুষ্যদের পরম্পরাগত শিক্ষার অনুরূপ, জগতের অক্ষরমালার অনুরূপ, খ্রীষ্টের অনুরূপ নয়।”

কলসীয় ৩:১২-১৩ পদ, “অতএব তোমরা, ঈশ্বরের মনোনীত লোকদের, পবিত্র ও প্রিয় লোকদের, উপযোগী মতে করুণার চিত্ত, মধুর ভাব, নম্রতা, মৃদুতা, সহিষ্ণুতা পরিধান কর। পরস্পর সহনশীল হও, এবং যদি কাহাকেও দোষ দিবার কারণ থাকে, তবে পরস্পর ক্ষমা কর; প্রভু যেমন তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়াছেন, তোমরাও তেমনি কর।”

কলসীয় ৪:৫-৬ পদ, “তোমরা বাহিরের লোকদের প্রতি বুদ্ধিপূর্বক আচরণ কর, সুযোগ কিনিয়া লও। তোমাদের বাক্য সর্বদা অনুগ্রহযুক্ত হউক, লবণে আস্বাদযুক্ত হউক, কাহাকে কেমন উত্তর দিতে হয়, তাহা যেন তোমরা জানিতে পার।”

সারসংক্ষেপঃ কলসীয় পুস্তকটিতে স্পষ্টভাবে লেখা হয়েছিল সেই পরাজয়ের ধর্মদ্রোহিতা যা মণ্ডলীর অস্তিত্বকে ধ্বংস করেছিল, আর যার উৎপত্তি হয়েছিল কলসীয়তে। এই চিঠিটি তার প্রতিক্রিয়া, যদিও আমরা জানি না পৌলকে কী বলা হয়েছিল।

পৌলের প্রতিক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে আমরা সারসংক্ষেপ করতে পারি যে, তিনি খ্রীষ্টের প্রতি একটি ত্রুটিপূর্ণূ দৃষ্টিভঙ্গির সাথে আচরণ করেছিলেন। (তাঁর বাস্তব এবং সত্য মানবতা এবং তার পূর্ণ মহিমাকে স্বীকার করে না।) পৌলকে ত্বকছেদ এবং ঐতিহ্যের উপর “যিহূদীদের” জোর দেওয়ার বিষয়েও বিতর্ক করতে দেখা যায় (কলসীয় ২:৮-১১; ৩:১১ পদ)। বিদ্রোহ সম্বোধন করা হয় একটি যিহূদী-জ্ঞানবাদ বা যিহূদী কঠোর সাধনা এবং গ্রীক (স্টোয়িক) দর্শনের মধ্যে একটি মিশ্রণ বলে। তিনি আমাদেরকে খ্রীষ্টের পর্যাপ্ততার দিকে নির্দেশ করার জন্য একটি অসাধারণ কাজ করেন।

কলসীয় পুস্তকটিকে খ্রীষ্টের মহিমা এবং ভ্রান্ত দর্শন (১:১৫-২:২৩ পদ), সেই সাথে বন্ধু এবং বক্তৃতা সহ খ্রীষ্টিয়ান আচরণ সম্পর্কিত উপদেশ রয়েছে (৩:১-৪:১৮ পদ)।

যোগসূত্রঃ সব প্রাথমিক মণ্ডলীর মতো, কলসীয়তে যিহূদী আইনসর্বস্থতার বিষয়টি পৌলের কাছে অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় ছিল। কাজ ছাড়াও অনুগ্রহের দ্বারা পরিত্রাণের ধারণাটি এতটাই অন্তর্নিহিত ছিল যে, যারা পুরাতন নিয়মের আইনে নিমজ্জিত ছিল, আর তাদের পক্ষে এটি উপলব্ধি করা খুবই কঠিন ছিল। ফলস্বরূপ, এই নতুন বিশ্বাসে আইন থেকে কিছু প্রয়োজনীয়তা যুক্ত করার জন্য আইনবিদদের মধ্যে ক্রমাগতে উদ্বেগ ছিল। তাদের মধ্যে প্রাথমিক ছিল ত্বকছেদের প্রয়োজনীয়তা যা তখনও কিছু যিহূদী ধর্মান্তরিতদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। কলসীয় ২:১১-১৫ পদে পৌল এই ত্রুটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন যেখানে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, খ্রীষ্ট এসেছিলেন বলে মাংসের ত্বকছেদের প্রয়োজন ছিল না। এর জন্য দরকার হৃদয়ের ত্বকছেদ, মাংসের নয়, পুরাতন নিয়মের আইনের আনুষ্ঠানিক আচার-অনুষ্ঠানের আর প্রয়োজন নেই (দ্বিতীয় বিবরণ ১০:১৬, ৩০:৬; যিরমিয় ৪:৪, ৯:২৬; প্রেরিত ৭:৫১; রোমীয় ২:২৯ পদ)।

বাস্তব বা কার্যকরী প্রয়োগঃ যদিও পৌল অনেক ক্ষেত্রেই তুলে ধরেছেন, তবে বর্তমানে আমাদের জন্য মৌলিক প্রয়োগ হল আমাদের জীবনে খ্রীষ্টের সম্পূর্ণ এবং পূর্ণ পর্যাপ্ততা, আমাদের পরিত্রাণ এবং আমাদের পবিত্রতা উভয়ের জন্য। আমাদের অবশ্যই সুসমাচার জানতে হবে এবং বুঝতে হবে যাতে আইন-কানুন এবং ধর্মদ্রোহিতার সুক্ষ্ম নিয়মের দ্বারা বিপথগামী না হই। প্রভু এবং ত্রাণকর্তা হিসেবে খ্রীষ্টের কেন্দ্রীয়তাকে হ্রাস করে এমন কোনো বিচ্যুতি থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যে কোন “ধর্ম” যা পুস্তকগুলি ব্যবহার করে সত্যের সাথে নিজেদের সমান করার চেষ্টা করে যেটিকে বাইবেলের কর্তৃত্বের সমান বলে দাঁড় করানোর দাবি করা হয়, অথবা যা পরিত্রাণের ঐশ্বরিক সিদ্ধির সাথে মানুষের প্রচেষ্টাকে একত্রিত করে তা অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। খ্রীষ্টিয়ান ধর্মের সাথে অন্যান্য ধর্মকে একত্রিত করা বা যোগ করা যায় না। খ্রীষ্ট আমাদের নৈতিক আচরণের সম্মান দেন। খ্রীষ্টিয়ান ধর্ম একটি পরিবার, একটি জীবন পদ্ধতি এবং একটি সম্পর্ক- এটি কোন ধর্ম নয়। ভাল কাজ, জ্যোতিষ, জাদুবিদ্যা এবং রাশিফল আমাদের ঈশ্বরের পথ দেখায় না। শুধুমাত্র খ্রীষ্টই দেখান। তাঁর ইচ্ছা, তাঁর বাক্য আমাদের কাছে তাঁর প্রেমের চিঠিতে প্রকাশিত হয়েছে; এই বিষয়টি আমাদের অবশ্যই জানতে হবে।

English



বাংলা হোম পেজে ফিরে যান

কলসীয় পুস্তক
© Copyright Got Questions Ministries