প্রশ্ন
ফিলীমন পুস্তক
উত্তর
লেখকঃ ফিলীমন পুস্তকের লেখক ছিলেন প্রেরিত পৌল (ফিলীমন ১:১ পদ)।
লেখার সময়কালঃ ফিলীমন পুস্তকটি আনুমানিক ৬০ খ্রীষ্টাব্দে লেখা হয়েছিল।
লেখার উদ্দেশ্যঃ ফিলীমনের কাছে লেখা চিঠিটি পৌলের সমস্ত লেখার মধ্যে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত এবং দাসত্বের অনুশীলনের সাথে সম্পর্কিত। চিঠিটি ইঙ্গিত দেয় যে, এটি লেখার সময় পৌল কারাগারে ছিলেন। ফিলীমন একজন ক্রীতদাসের মালিক ছিলেন যিনি তার বাড়ীতে একটি মণ্ডলীও পরিচালনা করেছিলেন। ইফিষে পৌলের পরিচর্যার সময়, ফিলীমন সম্ভবত শহরে যাত্রা করেছিলেন, পৌলের প্রচার শুনেছিলেন এবং একজন খ্রীষ্টিয়ান হয়েছিলেন। ক্রীতদাস ওনীষিম তার মালিক বা প্রভু ফিলীমনের জিনিসপত্র ছিনতাই করে রোম এবং পৌলের কাছে যাওয়ার পথ তৈরি করে পালিয়ে যায়। ওনীষিম তখনও ফিলীমনের সম্পত্তি ছিল এবং পৌল তার মালিক বা প্রভুর কাছে ফিরে আসার পথ মসৃণ করার জন্য লিখেছিলেন। পৌলের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে ওনীষিম একজন খ্রীষ্টিয়ান হয়েছিলেন (ফিলীমন ১০ পদ) এবং পৌল চেয়েছিলেন যে, ফিলীমন ওনীষীমকে কেবল একজন দাস হিসেবে নয়, কিন্তু খ্রীষ্টেতে একজন ভ্রাতা হিসেবে গ্রহণ করুক।
মূল বা প্রধান পদসমূহঃ ফিলীমন ৬ পদ, “আমাদের মধ্যে বিদ্যমান সমস্ত উত্তম বিষয়ের জ্ঞানে যেন তোমার বিশ্বাসের সহভাগিতা খ্রীষ্টের উদ্দেশে কার্যসাধক হয়, এই প্রার্থনা করিতেছি।”
ফিলীমন ১৬ পদ, “পুনরায় দাসের ন্যায় নয়, কিন্তু দাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির, প্রিয় ভ্রাতার ন্যায়; বিশেষরূপে সে আমার প্রিয়, এবং মাংসের ও প্রভুর, উভয়ের সম্বন্ধে তোমার কত অধিক প্রিয়।”
ফিলীমন ১৮ পদ, “আর যদি সে তোমার প্রতি কোন অন্যায় করিয়া থাকে, কিম্বা তোমার কিছু ধারে, তবে তাহা আমার বলিয়া গণ্য কর।”
সারসংক্ষেপঃ পৌল ক্রীতদাস মালিক বা প্রভুদের সতর্ক করেছিলেন যে, তাদের দাসদের প্রতি তাদের দায়িত্ব রয়েছে এবং দাসদেরকে দায়িত্বশীল নৈতিক সত্তা হিসেবে দেখিয়েছেন যারা ঈশ্বরকে ভয় করত। ফিলীমন পুস্তকে পৌল দাস হিসেবে কাজ করানোকে দোষী করেন নি, কিন্তু তিনি ওনীষিমকে দাসের পরিবর্তে একজন খ্রীষ্টিয়ান ভাই হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। যখন একজন মালিক বা প্রভু একজন দাসকে ভাই হিসেবে উল্লেখ করতে পারে, তখন দাস এমন একটি অবস্থানে পোঁছায় যেখানে ক্রীতদাসের বৈধ পদবী অর্থহীন হয়ে পড়ে। প্রাথমিক মণ্ডলী সরাসরি দাসপ্রথাকে আক্রমণ করেনি, তবে এটি মালিক বা প্রভু এবং দাসের মধ্যে একটি নতুন সম্পর্ক স্থাপন করেছিল। ফিলীমন এবং ওনীষিম উভয়কেই পৌল খ্রীষ্টিয়ান প্রেমের সাথে একত্রিত করার চেষ্টা করেছিলেন যেখানে স্বাধীনতার প্রয়োজন হয়। সুসমাচারের আলোকে প্রকাশ করার পরেই দাসত্বের প্রচলন বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
যোগসূত্রঃ সম্ভবত নতুন নিয়মের কোথাও আইন-কানুন এবং অনুগ্রহের মধ্যে পার্থক্য এত সুন্দরভাবে চিত্রিত করা হয় নি। রোমীয় আইন এবং পুরাতন নিয়মের মোশির আইন-কানুন উভয়ই সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত একজন পলাতক দাস ফিলীমনকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার দিয়েছে। কিন্তু প্রভু যীশুর মাধ্যমে অনুগ্রহের চুক্তি মালিক বা প্রভু বা দাস উভয়কেই খ্রীষ্টের দেহে সমান ভিত্তিতে প্রেমের সহভাগিতা করার অনুমতি দিয়েছে।
বাস্তব বা কার্যকরী প্রয়োগঃ নিয়োগদাতা, রাজনৈতিক নেতা, পৌরসভার নির্বাহী এবং পিতামাতারা খ্রীষ্টিয়ান কর্মচারী, সহকর্মী এবং পরিবারের সদস্যদের খ্রীষ্টের দেহের সদস্য হিসেবে আচরণ করার মাধ্যমে পৌলের পৌলের শিক্ষার চেতনার অনুসরণ করতে পারেন। আধুনিক সমাজে খ্রীষ্টিয়ানেরা অবশ্যই সাহায্যকারীদের তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জনে সহায়তা করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের একক হিসেবে দেখবে না, বরং খ্রীষ্টিয়ান ভাই ও বোন হিসেবে দেখবে যারা অবশ্যই অনুগ্রহের আচরণ গ্রহণ করবে। উপরন্তু, সমস্ত খ্রীষ্টিয়ান নেতাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, যারা তাদের জন্য কাজ করে তাদের আচরণের জন্য ঈশ্বর তাদের দায়বদ্ধ রাখেন, সাহায্যকারীরা খ্রীষ্টিয়ান হোক বা না হোক। তাদের অবশ্যই তাদের কাজের জন্য ঈশ্বরের কাছে জবাবদিহি করতে হবে (কলসীয় ৪:১ পদ)।
English
ফিলীমন পুস্তক