প্রশ্ন
ঈশ্বর দেখতে কেমন?
উত্তর
ঈশ্বর আত্মা (যোহন ৪:২৪ পদ), এবং তাই তাঁর অবয়ব বা চেহারা এমন কোন কিছুর মতো নয় যা আমরা বর্ণনা করতে পারি। যাত্রাপুস্তক ৩৩:২০ পদে লেখা আছে, “তুমি আমার মুখ দেখিতে পাইবে না, কেননা মনুষ্য আমাকে দেখিলে বাঁচিতে পারে না।” পাপী মানুষ হিসেবে আমরা ঈশ্বরকে তাঁর সমস্ত মহিমায় দেখতে অক্ষম। তাঁর উপস্থিতি বা চেহারা সম্পূর্ণরূপে অকল্পনীয় এবং এত বেশী মহিমান্বিত যে পাপী মানুষ তা নিরাপদে উপলব্ধি করতে পারে না।
বাইবেল বর্ণনা করে যে, ঈশ্বর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন লোকদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন। ঈশ্বরের চেহারা ঠিক কেমন এই দৃষ্টান্তগুলি তা বর্ণনা করে তেমনটি বুঝা উচিত নয়, বরং ঈশ্বর নিজেকে আমাদের কাছে এমনভাবে প্রকাশ করেছেন যা আমরা বঅনুভব করতে পারি। ঈশ্বর দেখতে কেমন তা আমাদের বোঝার এবং বর্ণনা করার ক্ষমতার বাইরে। ঈশ্বর তাঁর নিজের সম্পর্কে সত্য বিষয়টি আমাদের শেখানোর জন্য নানাভাবে, নানারূপে আমাদের সামনে এসে উপস্থিত হন, যেন আমরা আমাদের মনে তাঁর একটি সুন্দর প্রতিচ্ছবি অংকন করতে পারি। পবিত্র বাইবেলের দু’টি শাস্ত্রাংশ বা অনুচ্ছেদ অত্যন্ত শক্তিশালী ও চমকপ্রদভাবে ঈশ্বরের চেহারা বা প্রতিকৃতির বর্ণনা প্রদান করে, আর সে দু’টি হলো যিহিস্কেল ১:২৬-২৮ এবং প্রকাশিত বাক্য ১:১৪-১৬ পদ।
যিহিস্কেল ১:২৬-২৮ পদ ঘোষণ করে, “আর তাহাদের মস্তকের উপরিস্থ বিতানের ঊর্ধ্বে এক সিংহাসনের, নীল-কান্তমণিবৎ আভাবিশিষ্ট এক সিংহাসনের মুর্তি ছিল; সেই সিংহাসন-মূর্তির উপরে মনুষ্যের আকৃতিবৎ এক মূর্তি ছিল, তাহা তাহার ঊর্ধ্বে ছিল। তাঁহার কটির আকৃতি অবধি উপরের দিকে আমি প্রতপ্ত ধাতুর ন্যায় আভা দেখিলাম; অগ্নির আভা যেন তাহার মধ্যে চারদিকে ছিল; এবং তাঁহার কটির আকৃতি অবধি নিচের দিকে অগ্নি আভা দেখিলাম, এবং তাঁহার চারিদিকে তেজ ছিল। বৃষ্টির দিনে মেঘে উৎপন্ন ধনুকের যেমন আভা, তাঁহার চারিদিকের তেজের আভা সেইরূপ ছিল।” প্রকাশিত বাক্য ১:১৪-১৬ পদ ঘোষণা করে, “তাঁর মস্তক ও কেশ শুক্লবর্ণ মেষলোমের ন্যায়, হিমের ন্যায় শুক্লবর্ণ, এবং তাঁহার চক্ষু অগ্নিশিখার তুল্য, এবং তাঁহার চরণ অগ্নিকুণ্ডে পরিষ্কৃত সুপিত্তলের তুল্য, এবং তাঁহার রব বহুজলের রবের তুল্য। আর তাঁহার দক্ষিণ হস্তে সপ্ত তারা আছে, এবং তাঁহার মুখ হইতে তীক্ষ্ম দ্বিধার তরবারি নির্গত হইতেছে, এবং তাঁহার মুখমণ্ডল নিজ তেজে বিরাজমান সূর্যের তুল্য।”
এই অনুচ্ছেদগুলি ঈশ্বরের উপস্থিতি বর্ণনা করার ক্ষেত্রে যিহিস্কেল এবং যোহনের শ্রেষ্ঠ প্রচেষ্টার প্রতিনিধিত্ব করে। তাদের বর্ণনা করতে প্রতীকী ভাষা ব্যবহার করতে হয়েছিল, যার জন্য মানুষের ভাষার কোন শব্দ নেই; উদাহরণস্বরূপ, “কী আবির্ভাবের মত” “চেহারার মতো” “তিনি দেখতে কেমন” ইত্যাদি। আমরা জানি যে, যখন আমরা স্বর্গে থাকব, তখন “তিনি যেমন আছেন, তাঁহাকে তেমনি দেখিতে পাইব।” পাপ আর থাকবে না, এবং আমরা ঈশ্বরকে তাঁর সমস্ত মহিমায় উপলব্ধি করতে সক্ষম হব।
English
ঈশ্বর দেখতে কেমন?